Blog Archive

Written By Bangladeshi on Friday, 24 February 2017 | 22:09

 ককেশাসের মহানায়ক ইমাম শামিল




বর্তমান যুগে ইমাম বা আলেম শব্দটি শুনলেই চোখে ভেসে আসে দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবীওয়ালা এমন ব্যক্তির চেহারা যিনি আমাদেরকে নামাজ, রোযার মাসআলা দিয়ে থাকেন। ছেলেরা টাখনুর নিচে কাপড় পড়বো, নাকি টাখনুর উপরে কাপড় পড়বে, মেয়েরা মুখ ঢাকবে নাকি ঢাকবে না এরূপ মাসআলা নিয়েই তাদের কাজ। অথচ ইমাম শামিল (রহঃ ) যিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত আলেম, তার ঘটনা শুনলে আলেম শব্দের ধারণাই বদলে যাবে।
উসমানী খিলাফতের সৈনিক ইমাম শামিল ( রহ:)কে বলা হয় আঠারো শতকের রুশ সিংহ। দা গেস্তান ও ককেশাসের এই মহান বীর অর্ধশত বছর ধরে নাকানি চুবানি খাইয়েছেন প্রতাপশালী রুশ জার সম্রাটদের। ইতিহাস তাই তাকে করে রেখেছে অমর, অক্ষয়।
এক যুদ্ধে তার পাঁজরের তিনটি হাড় কেটে যায় ও তাকে ঘেরাও করে ফেলে জার সৈন্যরা। তখন তিনি তার বিখ্যাত ঘোড়ায় চড়ে এক লাফে আল্লাহু আকবার হুংকার দিয়ে, তিন সারি সৈন্যের মাথার উপর দিয়ে চলে যান। এরপর থেকেই তিনি সিংহ বলে পরিচিত।
বিখ্যাত লেখক লিউ তলস্তয়কে তার খালা জোর করে যুদ্ধে পাঠান শুধুমাত্র ইমাম শামিল কে দেখতে। যেনো তিনি গর্ব করে বলতে পারেন তার ভাগিনা ইমাম শামিলকে দেখেছে। এ যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়েই তলস্তয় লিখেছিলেন কাফকার ডায়রি ও ওয়ার এন্ড পিস নামের জনপ্রিয় দুটি বই।
অর্ধশত বছর লড়াই করে শেষ বয়সে এক প্রচন্ড যুদ্ধে পরাজিত হন তিনি। তার কয়েকজন নায়েব সহ বন্দি হন তিনি। কিন্তু আত্মসমর্পন করেন নি তিনি। জার সম্রাট আলেক্সজ্যান্ডারই তাকে সসম্মানে সেন্ট পিটার্সবার্গে নিয়ে তার ইচ্ছা অনুযায়ি মদিনায় পাঠিয়ে দেন। অবশেষে সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
আজো তিনি উজবেক, আফগান, চেচেন এলাকার স্বাধীনতার প্রতীক আর প্রেরণার উত্স। সেসব অঞ্চলে খিলাফতের প্রথম পতাকাবাহী। তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত আলেম। তার বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে তার শত্রুরাই সেন্ট পিটার্সবার্গে তৈরী করে তার প্রতিকৃতি।

0 disqus:

Post a Comment

Eboi.ML© 2014. All Rights Reserved. Published By Kaizen Template