Blog Archive

Written By Bangladeshi on Wednesday, 1 March 2017 | 12:42

কারাগার থেকে বলছি [Karagar theke Bolchi]


মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক রচিত "কারাগার থেকে বলছি"তে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রিমান্ডের বর্ননা: 

“পুরুষাঙ্গের সাথে তিন কেজির পাথর ঝুলিয়ে দিয়েছে- এমন একজন রাজশাহী নিবাসী একজন ব্যবসায়ী বন্দী আমি দেখেছি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। একই বন্দীকে ডিবি কার্যালয়ে দুই চোখে আঙ্গুল দিয়ে সজোরে খোজা মেরেছে। ঘটনার এক মাস পর দেখেছি তার এক চোখের অর্ধেকটা জুড়েই লাল রক্তের থোকা জমাট বাধা আছে। এমন বন্দীও দেখেছি, যার পুরুষাঙ্গের সাথে বিদ্যুতের ক্লিপ লাগিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে দেয়া হয়েছে। উলঙ্গ করে দশজন মানুষের সামনে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আলেম ও দ্বীনদার মানুষকে। পায়খানার রাস্তা দিয়ে একের পর এক গরম ডিম বা ঠান্ডা বরফ ঢুকিয়ে দিয়েছে। এমন বন্দীও দেখেছি, হাত-পায়ের সমস্ত নখগুলোকে প্লাস দিয়ে টেনে টেনে তুলে নিয়েছে। হাতের আঙ্গুলের ভিতর পিন ঢুকিয়ে দিয়েছে অতঃপর সেই পিনের মাথায় অনবরত আঘাত করেছে বা গ্যাস লাইটে আগুন ধরিয়ে পিনের মাথায় উত্তাপ দিয়েছে এতে আঙ্গুলের মধ্যে ঢুকানো সম্পূর্ণ পিন গরম হয়ে আঙ্গুলের মাথা পুড়ে কালো হয়ে গেছে। দুই হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে শূন্যে ঝুলিয়ে রেখেছে বা দু পা উপরে দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে ঘন্টার পর ঘন্টা। বন্দীর সামনে তার স্ত্রীকে, বোনকে বা মাকে এনে উলঙ্গ করে ফেলেছে। এমন বন্দীও আছে যার স্ত্রীকে এনে উপর্যুপরি ধর্ষণ করেছে। ষোল বার ধর্ষণ করা হয়েছে একজনের স্ত্রীকে এমন ঘটনাও ঘটেছে। আঠারো-বিশ বছরের একটি ছেলেকে দেখেছি তাকে উপুড় করে ফেলে পিঠের উপর গাড়া দিয়ে দুই হাত পেছন দিকে মুড়ে উভয় হাতের হাড্ডি ভেঙ্গে ফেলেছে। ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে দেখেছি রিমান্ডের নির্যাতনে কোমর থেকে নিচের দিকে অচল হয়ে আছে। এমন বন্দীও দেখেছি, মাসের পর মাস হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রেখেছে পিঠের পেছন দিকে হাত মুড়িয়ে। টানা ৩৬ দিন হ্যান্ডকাপ পরিয়ে হাত উচু করে বেধে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি সেল চন্দ্রার পঞ্চম তলায় পূর্ব ব্লক যেখানে আমি আছি, এখানেই একজন বন্দী আমাদের সাথে আমার পাশের রুমেই থাকেন। জুয়েল ভাই। নারায়নগঞ্জের মমিন উল্লাহ ডেভিডের ছোট ভাই তিনি। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। গ্রেফতার হয়েছেন ১৯৯৭ সালে। গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে টর্চার করা হয়। ২০০৮ সালে র‌্যাবের টর্চার সেলে তার উপর টর্চার করে যৌথ বাহিনীর টিম। টর্চারের এক পর্যায়ে গলায় পাড়া দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে। জুয়েল ভাই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাননি। কিন্তু শ্বাসরুদ্ধ না হলেও তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন আজ পাঁচ বছর যাবত। বিএনপি’র গ্রুপিংয়ের শিকার হয়ে গ্রেফতার হওয়া তরতাজা যুবক জুয়েল ভাইয়ের বাকরুদ্ধ বোবা অবস্থা দেখলে দুঃখ হয় তার জন্য। আর মনের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করে একটি প্রশ্ন- এভাবে আর কত মায়ের ছেলে শিকার হবে এমন রিমান্ড নির্যাতনের? মিরপুর থানায় ৭২ বছর বয়সী একজন মসজিদের ইমামকে হেফাজতের মামলায় দুই হাত বেধে দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত উপর্যুপরি লাঠির আঘাত করেছে। আঘাতের কারণে হাত ফুলে পচন ধরে গিয়েছে। এমন ভয়ংকর সব টর্চার চালানো হয় রিমান্ডে।” 
................... 

ডাউনলোড


0 disqus:

Post a Comment

Eboi.ML© 2014. All Rights Reserved. Published By Kaizen Template